Sunday, August 3, 2014

ক্যারিয়ার গড়তে পারেন প্রকাশনা সংস্থায়

ক্যারিয়ার গড়তে পারেন প্রকাশনা সংস্থায় 
- এস এম মাহফুজ

আমি লেখক। আমার ছোট ভাইকে আমার পেশা সম্পর্কে একজন জিজ্ঞাসা করছে, আপনার ভাই কী করে?
- লেখা-লেখি করে।
- আসলেই আপনার ভাই কী করে?
- লেখা-লেখি করে।
- না, মানে আপনার ভাইয়ের পেশা কী?
- কেন? লেখালেখি।

আমি লিখছি। একজন দেখা করতে এসেছে। বলা হলো উনি লিখছেন।
- লিখছেন মানে? তাকে বলুন আমি দেখা করতে এসেছি।
- উনি ব্যস্ত।
- ব্যস্ততা আবার কিসের?
- লেখার ব্যস্ততা!
- একি কোনো কাজ হলো যে ডিস্টার্ব করা যাবে না?
আমার পেশাটাকে স্বীকৃতি দিতে সবারই একটু কষ্ট হচ্ছে। লেখা কারো পেশা হতে পারে? হ্যাঁ, লেখালেখিই হতে পারে একটি আদর্শ পেশা। এ পেশার যথার্থতা প্রকাশনা সংস্থার দ্বারাই। ১৮০০ শতকের পর ইংরেজরা প্রথম চালু করে ছাপাখানা। এরপর থেকেই প্রকাশনা তার অবস্থান শক্ত করে নেয়। বর্তমানে কম্পিউটার আর প্রযুক্তির বদৌলতে প্রকাশনা আমাদের কাছে শিল্প হিসেবে ধরা দিয়েছে। স্বাধীনতা পরবর্তী বাংলাদেশে প্রকাশনা শিল্পে ক্যারিয়ার গড়ার সুযোগ কম থাকলেও একুশ শতকে এসে প্রকাশনায় ক্যারিয়ার গড়ার ব্যাপক সুযোগ সৃষ্টি হয়েছে।

প্রকাশনা শিল্প : বর্তমান প্রেক্ষাপট

বর্তমান সভ্যতা প্রকাশনা শিল্পের সাথে ওতপ্রোতভাবে জড়িত। প্রযুক্তির বিকাশের সাথে সাথে মানুষ ব্যক্তিগত থেকে রাষ্ট্রীয় এবং আন্তর্জাতিক তথা সকল পর্যায়ে প্রকাশনা শিল্পের ওপর নির্ভরশীল। ফলে এ শিল্পে কাজ করার সুযোগও বিস্তৃত। বর্তমান প্রজন্মের তরুণ তরুণীরাও এ শিল্পের প্রতি আগ্রহী হয়ে উঠছে। তা ছাড়া এ শিল্পের অনেক ধাপ হওয়াতে যে কোনো ধাপে ছোট পরিসরে কাজ করার সুযোগ রয়েছে। যেখানে কাজ করতে তেমন কোনো পুঁজির দরকার হয় না। যেমন- যে কেউ ইচ্ছে করলেই নিজ বাড়িতে কম্পোজ বা ডিজাইনের কাজ করে বেশ ভালো আয় করতে পারেন। আবার বড় বড় প্রতিষ্ঠানে চাকরির সুযোগ তো রয়েছেই। সংবাদপত্রকে বাদ দিলে প্রকাশনা শিল্পকে প্রধান দুটি ভাগে বিভক্ত করা যায়-
১. সৃজনশীল প্রকাশনা
২. একাডেমিক বই-পত্রের প্রকাশনা
সৃজনশীল প্রকাশনা বলতে আমরা সচরাচর একাডেমিক বইয়ের বাইরের বই যেমন Ñ গল্প, কবিতা, উপন্যাস, প্রবন্ধ ইত্যাদি বইকে বুঝি। আর একাডেমিক প্রকাশনা হচ্ছে পাঠ্যবই এবং সেগুলোর সহায়িকা নোট বা গাইড।

এ শিল্পের প্রধান ব্যক্তিবর্গ

প্রকাশনা শিল্প একটি বিস্তৃত বিষয়। লেখকের লেখা কম্পিউটারে কম্পোজ হয়ে, ছাপাখানায় ছেপে, প্রয়োজনে বাইন্ডিং হয়ে, পাঠকের দোরগোড়ায় পৌঁছানো পর্যন্ত সব কাজই প্রকাশনা শিল্পের অন্তর্গত। তবে শুধু কম্পোজ, ছাপাখানা আর বাইন্ডিং-এর মধ্যে সীমাবদ্ধ নয়, একাজের পরিধি ব্যাপক বিস্তুৃত। এ শিল্পে যারা প্রধান ভূমিকা পালন করে তাদের ধাপগুলো হলো-
১. লেখক/পাণ্ডুলিপি প্রস্তুতকারক
২. প্রধান সম্পাদক ৩. সম্পাদক
৪. কম্পোজ ৫. প্রুফ রিডিং
৬. শিল্প নির্দেশক (প্রচ্ছদ ও অলঙ্করণ)
৭. ট্রেসিং/আউটপুট ৮. উৎপাদন
৯. প্রেস/বাইন্ডিং ১০. মার্কেটিং
শুধু এখানেই শেষ নয়, বই/ প্রকাশনা সামগ্রী প্রকাশিত হওয়ার পর তা বাজারজাতকরণের ব্যবস্থা। এসব ধাপের সমন্বিতরূপই প্রকাশনা শিল্প।

ক্যারিয়ার গড়ার পূর্ব প্রস্তুতি

প্রকাশনা শিল্পে ক্যারিয়ার গড়তে হলে, প্রথমেই নির্বাচন করতে হবে আপনি কোন বিভাগে কাজ করতে চান। মেধাবী হলে অবশ্যই একাডেমিক প্রকাশনায় কাজ করতে পারেন। কিন্তু সৃজনশীল শাখায় কাজ করতে হলে মননশীল দৃষ্টিভঙ্গি থাকা চাই। সৃজনশীল শাখায় কাজ করতে আপনাকে দেশ-বিদেশের শিল্প-সাহিত্য, দর্শন, বিজ্ঞান ইত্যাদি বিষয়ক বই পড়তে হবে। সম্পাদনার যোগ্যতাটাও এখানে গুরুত্বপূর্ণ। তবে বর্তমান প্রকাশনা জগৎটা যেহেতু শুধু লেখা আর সম্পাদনায় সীমাবদ্ধ নয় তাই এ পেশায় আরো দশটি ক্ষেত্রের মত অনেক সুযোগ রয়েছে। প্রকাশনা শিল্পের ওপর পড়ার বিষয় হিসেবে আলাদা কোন সাবজেক্ট না থাকলেও এ পেশার কাজ করতে প্রয়োজন আগ্রহ আর দৃঢ় মনোবল। সরকারি গ্রাফিক্স আর্ট ইনস্টিটিউটে এ শিল্পের বিষয় নিয়ে লেখা পড়া করানো হয়। চারুকলার শিক্ষার্থীরাও সহজেই এখানে কাজ করতে পারেন। কম্পিউটারের কাজ বিশেষ করে কম্পোজ, গ্রাফিক্স যারা ভালো পারেন তারাও এ শিল্পে কাজ করতে পারেন।

কাজের ধাপ ও ক্ষেত্র

প্রকাশনা শিল্পে রয়েছে কাজের নানান ধাপ। যে কেউ তার যোগ্যতানুযায়ী পছন্দমত ক্ষেত্রে কাজ করতে পারেন। কিংবা পছন্দমত প্রতিষ্ঠান গড়তে পারেন। তবে একে প্রধান তিনটি ধাপে ভাগ করা চলে-
১. প্রি-প্রোডাকশন (উৎপাদনপূর্ব)
২. প্রোডাকশন (উৎপাদন)
৩. পোস্ট পোডাকশন (উৎপাদনোত্তর)

প্রি-প্রোডাকশন

প্রি-প্রোডাকশন বা উৎপাদন পূর্ববর্তী ধাপে, প্রাথমিক পর্যায়ে প্রকাশনা শিল্পে লেখকের লেখা, পাণ্ডুলিপি সম্পাদকের সম্পাদনা, অনুবাদের কাজ থাকলে অনুবাদ, আলোকচিত্রীর আলোকচিত্র, প্রচ্ছদ ও অলঙ্করণ, কম্পোজ, গ্রুফ রিডিং, পেস্টিং ইত্যাদি কাজগুলো হয়ে থাকে। এ ধাপে যারা কাজ করেন তারা হলেন-
১. প্রকল্প সমন্বয়কারী ২. লেখক
৩. অনুবাদক ৪. পাণ্ডুলিপি সম্পাদক
৫. কম্পোজার ৬. গ্রুফ রিডার
৭. প্রচ্ছদ এবং অলঙ্করণ শিল্পী ইত্যাদি
এরা সবাই মিলে যে কোনো লেখাকে চূড়ান্ত ছাপানোর জন্য পাঠান “প্রোডাকশন” ধাপে।

প্রোডাকশন (উৎপাদন)

এ ধাপে প্রস্তুতকৃত লেখাটি প্রোডাকশন ম্যানেজারের নেতৃত্বে ছাপানোর কাজটি হয়ে থাকে। এ ক্ষেত্রে কাগজ ক্রয়, প্রেস নির্বাচন, ছাপার মান নিয়ন্ত্রণ, ছাপানোর পরে বাইন্ডিং খানায় পাঠিয়ে বাইন্ডিং করা ইত্যদি কাজগুলো হয়ে থাকে। এখানে কাজ করেন-
১. উৎপাদন কর্মকর্তা ২. পেস্টিং ম্যান
৩. প্লেট মেকার ৪. প্রেস বা ছাপাখানা
৫. বাইন্ডিং ম্যান
এরা পুরো প্রকাশনীর কাজ সম্পন্ন করে বিক্রির জন্য মার্কেটিং-এ পাঠান।

পোস্ট-প্রোডাকশন

প্রস্তুতকৃত বইটি বাজারজাতকরণই এ পর্যায়ের প্রধান কাজ। প্রতিষ্ঠানের উৎপাদিত পণ্য যাতে বাজারজাত হয় এবং বিক্রয়ের মাধ্যমে প্রতিষ্ঠান লাভবান হয় সে কাজটি এ পর্যায়ে হয়ে থাকে। মার্কেটিং হলো এ পর্যায়ের প্রধান কাজ। ভালো সেল দিতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয় এ বিভাগ। যেমন : প্রকাশনার প্রসারে বিজ্ঞাপন। প্রয়োজনে লিফলেট বিতরণ, ব্রুশিয়ার, ব্যানার ইত্যাদি তৈরি কিংবা শিক্ষকদের কনভেন্স তথা বিভিন্ন উপায়ে প্রকাশনার সার্কুলেশন বৃদ্ধির কাজটি করে থাকে এ বিভাগ।

কয়েকটি উল্লেখযোগ্য প্রকাশনা প্রতিষ্ঠান

দেশে বর্তমানে হাজারের ওপর প্রকাশনা প্রতিষ্ঠান রয়েছে। বিদ্যমান প্রকাশনা প্রতিষ্ঠানগুলো বিভিন্ন ক্যাটাগরিতে ভাগ করা যায়
১. সৃজনশীল প্রকাশনা
২. ইসলামী প্রকাশনা
৩. একাডেমিক বই-পত্রের প্রকাশনা
সৃজনশীল প্রকাশনা প্রতিষ্ঠানের মধ্যে- অন্য প্রকাশ, অনন্যা, মিজান পাবলিকেশন্স, বাংলা সাহিত্য পরিষদ, প্রীতি প্রকাশনী, কাকলী, ইউপিএল, মাওলা বাদ্রার্স, হাতে খড়ি, বিদ্যা প্রকাশ, গতিধারা, হক্কানী পাবলিকেশন্স ইত্যাদি।
ইসলামী প্রকাশনা প্রতিষ্ঠানের মধ্যে- আধুনিক প্রকাশনী, মদীনা পাবলিকেশন্স, বাংলাদেশ ইসলামিক সেন্টার, আহসান পাবলিকেশন্স, শতাব্দী প্রকাশনী, আল কুরআন একাডেমী লন্ডন, ছারছীনা প্রকাশনী, ইসলামিয়া কুতুবখানা ইত্যাদি উল্লেখযোগ্য।
একাডেমিক প্রকাশনার মধ্যে স্কুল এবং মাদরাসা দু’ভাগে রয়েছে। স্কুল প্রকাশনা প্রতিষ্ঠানের মধ্যে পাঞ্জেরী পাবলিকেশন্স, লেকচার পাবলিকেশন্স, জুপিটার গাইড হাউজ, হাসান বুক ডিপো, গ্যালাক্সি গাইড, কাজল ব্রাদার্স, এম আব্দুল্লাহ অ্যান্ড সন্স ইত্যাদি।
মাদ্রাসা প্রকাশনা প্রতিষ্ঠান হলো- কামিয়াব প্রকাশনী, পাঞ্জেরী ইসলামিক পাবলিকেশন্স, আল ফাতাহ পাবলিকেশন্স, আল বারাকা, আল মদীনা, আল আরাফা, মিল্লাত, উইনার ইত্যাদি। এছাড়াও বাংলা একাডেমী, ঢাবিসহ বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয় প্রকাশনাসংস্থা, নয়া দিগন্তসহ বিভিন্ন পত্রিকার নিজস্ব প্রকাশনা প্রতিষ্ঠান রয়েছে।

গড়তে পারেন প্রকাশনা প্রতিষ্ঠান

চাইলে আপনিও গড়তে পারেন প্রকাশনা প্রতিষ্ঠান। প্রকাশনা শিল্প তাবৎ পৃথিবীর অন্যান্য শিল্প হতে একটু আলাদা। আপনার আর্থিক যোগানের পাশাপাশি দেশের জন্য কিছু করার সুযোগ রয়েছে এ শিল্পে। আপনিতো বটেই আপনার তত্ত্বাবধানে হয়তো এমন কোনো স্টার জন্ম নেবে যে পরিচর্যার অভাবে নিজের প্রতিভা বিকাশ করতে পারছিল না। আপনার সকল প্রচেষ্টা হবে সৃজনশীল যার মাধ্যমে সৃষ্টি হবে নতুন নতুন বই, জ্ঞানের নতুন ক্ষেত্র। তবে এ প্রতিষ্ঠান গড়তে হলে আগেই সিদ্ধান্ত নিন কোন ধরনের প্রতিষ্ঠান আপনি করবেন- সৃজনশীল, একাডেমিক না উভয়ই? তবে সবক্ষেত্রেই অর্থ যোগানের বিষয়টি আসবে। সৃজনশীল প্রকাশনার ক্ষেত্রে একাডেমিকের চেয়ে একটু কম পুঁজি লাগতে পারে। সাথে সাথে আপনার থাকতে হবে অভিজ্ঞতা, সৃষ্টিশীলতা, সততা, পরিশ্রম এবং দক্ষতা। এ প্রতিষ্ঠান প্রতিষ্ঠায় অভিজ্ঞতার যথেষ্ট প্রয়োজন রয়েছে। এটি যেমন প্রতিযোগিতামূলক আবার তেমনি জটিল কাজ। বই নির্বাচন এবং পাণ্ডুুলিপি নির্বাচনে সাবধানতা অনস্বীকার্য। বর্তমান বাজার, সময়ের চাহিদা এবং ভবিষ্যৎ বিষয় মাথায় রেখেই এসব নির্বাচন করতে হবে। আপনি এভাবে বই নির্বাচন করে কোয়ালিটি প্রোডাকশন এবং যথার্থ বিপণনের ব্যবস্থা করতে পারলে আপনার সফলতা নিশ্চিত। বইয়ের দাম একটি গুরত্বপূর্ণ বিষয়। আপনার খরচের সাথে সঙ্গতি রেখে সেটা নির্ধারণ করুন। বই বিক্রির ক্ষেত্রে আপনার বিভিন্ন সোর্স প্রয়োজন। এজন্য লাইব্রেরি, এনজিও প্রতিষ্ঠান, বইয়ের দোকান, শোরুম ইত্যাদির সাথে যোগাযোগ রাখুন। বইমেলার কথা মাথায় রেখে তখন সেভাবে প্রোডাকশনের ব্যবস্থা করতে পারেন। একাডেমিক বইয়ের ক্ষেত্রে বাজারের অন্যান্য বইয়ের তুলনায় আপনার এক্সক্লুসিভ কিছু থাকতে হবে। তবেই প্রকাশক হিসেবে সফলতার মুখ আপনি দেখবেন।

ক্যারিয়ার সম্ভাবনা


প্রকাশনা শিল্পে রয়েছে উজ্জ্বল ক্যারিয়ার। বর্তমান এটি একটি যেমন চ্যালেঞ্জিং পেশা তেমনি আবার প্রতিযোগিতাও এখানে রয়েছে। প্রকাশক হিসেবে যেমন আপনার প্রতিষ্ঠানের আয় আপনি পাবেন, আবার লেখক হিসেবে রয়েছে অনেক সুযোগ। লেখকেরা তাদের যোগ্যতা দিয়ে বাজারদখল করতে পারলে শুধু একটা প্রকাশনী নয় হাজারটা প্রকাশনী আপনাকে হাতছানি দিবে। আপনি যদি জনপ্রিয় লেখক হন তাহলে তো কথাই নেই। যেমন ধরুন, হুমায়ুন আহমেদ। প্রতি বছর যদি তাঁর ২০টি বই বের হয়, প্রত্যেক বই থেকে তিনি ১ লাখ টাকা করে পেলে, মোট হবে ২০ লাখ। ১২ মাসে ২০ লাখ হলে মাসে প্রায় ১ লাখ ৬৬ হাজার। যা হোক এখানে শুধু লেখক হিসেবেই না অন্য যে বিভাগ আছে সম্পাদক, শিল্প নির্দেশক, প্রুফ রিডার, অনুবাদক এভাবে সবারই অনেক আয়ের যথেষ্ট সুযোগ রয়েছে। ধীরে ধীরে বাড়ছে এ শিল্পের কলেবর। ক্যারিয়ারের ক্ষেত্রে সুনাম ও আয়ের জন্য নিঃসন্দেহে এটি ভালো ক্ষেত্র। এক দিকে যেমন আয়ের জন্য অন্যদিকে সুনাম কুড়ানোর জন্যও।





Saturday, August 2, 2014

বই প্রকাশের আগে প্রকাশকের সঙ্গে চুক্তি ছাড়া লেখকের স্বার্থ রক্ষা করা কঠিন::মনজুরুর রহমান


সাক্ষাৎকার গ্রহণ : মাহবুব মোর্শেদ
অমর একুশে বইমেলার প্রেক্ষাপটে লেখক-প্রকাশকদের মধ্যে কপিরাইট, রয়ালটি ইত্যাদি বিষয় নিয়ে নানা আলোচনা ও তর্কবিতর্ক শুরু হয়েছে। এসব বিতর্কে একটি বিষয় স্পষ্ট হয়ে উঠেছে যে, দেশে কপিরাইট ও রয়ালটি সংক্রান্ত আইনকানুন বিষয়ে সামগ্রিক সচেতনতার বিশেষ অভাব আছে। এ প্রেক্ষাপটেই সমকাল কথা বলেছে বাংলাদেশ কপিরাইট অফিসের রেজিস্ট্রার মনজুরুর রহমানের সঙ্গে। মনজুরুর রহমানের জন্ম ৬ নভেম্বর ১৯৫৯ সালে, কিশোরগঞ্জে। ২০০৯ সাল থেকে তিনি সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়ের অধীন কপিরাইট অফিসের রেজিস্ট্রার হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। কপিরাইট বিষয়ে তিনি আন্তর্জাতিক প্রশিক্ষণে অংশ নিয়েছেন। সরকারি দায়িত্ব পালনের পাশাপাশি তিনি লেখালেখি করেন। বুদ্ধিবৃত্তিক সম্পদ বিষয়ে তার একটি বই আগামী মেলায় প্রকাশিত হবে। কপিরাইট অফিসের কার্যক্রম, মেধাস্বত্ব, রয়ালটি ইত্যাদি বিষয়ে তিনি কথা বলেছেন সমকালের সঙ্গে


সমকাল : বাংলাদেশে একটি কপিরাইট অফিস থাকা সত্ত্বেও এর কার্যক্রম সম্পর্কে অনেকেই জানেন না বা কপিরাইট আইন সম্পর্কে অনেকেই সচেতন নন। কপিরাইট অফিস কতদিন আগে কাজ শুরু করেছে?

মনজুরুর রহমান : কপিরাইট অফিস যাত্রা শুরু করেছে ১৯৬২ সাল থেকে তদানীন্তন পূর্ব পাকিস্তানে। তখন পুরনো আইনে চলত। ১৯৯৩ সাল পর্যন্ত ব্রিটিশ আইন অনুসরণ করা হতো। পাকিস্তান আমলে কিছু কিছু সংশোধন আনা হয়েছিল। ২০০০ সালে বাংলাদেশে নতুন আইন হয়েছে, বাংলাদেশ কপিরাইট আইন নামে। ২০০৫ সালে এটি সংশোধন হয়েছে। ২০০৬ সালে আইন অনুসারে বিধিমালা তৈরি হয়েছে। কপিরাইট অফিস এখন এই বিধিমালায় চলে। ২০১০ সালে আইন ও বিধিমালা ইংরেজিতে অনূদিত হয়েছে। আমাদের কপিরাইট আইন পৃথিবীর যে কোনো দেশের কপিরাইট আইনের সঙ্গে পাল্লা দিতে সক্ষম। ছোটখাটো ত্রুটি সত্ত্বেও এটি বিশ্বব্যাপী গ্রহণযোগ্য আইন। তবু এর ক্রমাগত সংশোধনের একটি প্রক্রিয়া চলমান আছে।
সমকাল : কপিরাইট আইন ও বিধিমালার আওতায় কী কী পড়ে?

মনজুরুর রহমান : সাহিত্য, চিত্রকলা, সঙ্গীত, ফটোগ্রাফি, অ্যাডভার্টাইজিং, কম্পিউটার সফটওয়্যার থেকে শুরু করে যত ধরনের সৃজনশীল কাজ আছে তা এই আইনের আওতায় আসবে। এসব ক্ষেত্রে যত ভায়োলেশন হতে পারে তা এই আইন ও বিধিমালার দ্বারা প্রতিবিধান করা যাবে।

সমকাল : কপিরাইট আইনে কপিরাইট অফিসকে কি পুলিশিং অথরিটি দেওয়া হয়েছে?

মনজুরুর রহমান : আমাদের সরাসরি পুলিশিং অথরিটি দেওয়া হয়নি। এই আইন অনুসারে একটি কপিরাইট বোর্ড কাজ করে। এটি একটি কোয়াসি জুডিসিয়াল অফিস। কেউ যদি রেজিস্ট্রেশন চায় তবে আমরা রেজিস্ট্রেশন করি। আমি রেজিস্ট্রার হিসেবে কারও কপিরাইট দাবিকে রেজিস্টার করি। কারও কপিরাইট রেজিস্ট্রি প্রক্রিয়ার দ্বারা অন্য কেউ ক্ষতিগ্রস্ত হলে তিনি কপিরাইট বোর্ডে আপিল করতে পারেন। কপিরাইট বোর্ড অভিযোগ পেলে দু'পক্ষকে ডেকে শুনানি করে। কেউ যদি বোর্ডের সিদ্ধান্তে দ্বিমত প্রকাশ করেন তবে তিনি আদালতে যেতে পারেন। এর বাইরে যদি কোনো অন্যায় হয়, যেমন_ কোনো লেখকের বই যদি এখানে নকল হয় বা বিদেশি কোনো প্রকাশনা যদি নকল হয় তবে বিক্ষুব্ধরা সরাসরি থানায় যাবে এবং মামলা হবে। সে ক্ষেত্রে কোর্ট বিচার করে কপিরাইট আইন অনুসারে শাস্তি দেবেন। টাস্কফোর্সের অপারেশনে এমন বহু পাইরেটেড বই আমরা উদ্ধার করেছি। দেশি-বিদেশি বহু বই এখানে আইনবহির্ভূতভাবে পাইরেটেড হওয়ার নজির আছে। আমি ২০০৯ সালে এ অফিসের দায়িত্ব গ্রহণের পর মোট ৯টি অপারেশন পরিচালনা করা হয়েছে।

সমকাল : একজন শিল্পীর গান বা সিডি যদি পাইরেটেড হয়ে বাজারে চলে আসে তবে তার করণীয় কী?

মনজুরুর রহমান : তিনি সরাসরি কোর্টে মামলা করতে পারেন। সত্যিকার অর্থে কপিরাইট কী আমরা জানি না বা এ বিষয়ে সচেতন নই। একজন মানুষের দু'ধরনের সম্পদ আছে। একটা বস্তুগত সম্পদ, আরেকটি মেধাসম্পদ। জমি, ঘর, বাড়ি, ব্যবসা, ব্যাংক ব্যালান্স বস্তুগত সম্পদ। আর একজন শিল্পী-সাহিত্যিক-চলচ্চিত্র নির্মাতা যে শিল্প-সাহিত্যকর্ম তৈরি করেন সেগুলো তার মেধাসম্পদ। মেধাসম্পদের দুটি দিক আছে : একটি ইন্ডাস্ট্রিয়াল পার্ট, আরেকটি কালচারাল পার্ট। ইন্ডাস্ট্রিয়াল পার্টের আওতায় আসে পেটেন্ট, ডিজাইন, ট্রেডমার্ক, জিওগ্রাফিক্যাল ইন্ডিকেশন ইত্যাদি বিষয়। এটা শিল্প মন্ত্রণালয়ের অধীন ট্রেডমার্ক অফিস দেখাশোনা করে। আর কালচারাল পার্টটা দেখাশোনা করে কপিরাইট অফিস। প্রেস আবিষ্কারের পরপরই এ ধরনের আইনের উদ্ভব ঘটে। ঊনবিংশ শতকে গ্রামোফোন কোম্পানিগুলো চালু হলে গানের ব্যাপারে আইন চালু হয়। একটি সৃষ্টিকর্ম, যেমন_ গান, কবিতা, উপন্যাস, ছবি ইত্যাদি যদি শিল্পীর অনুমতি, স্বীকৃতি বা তাকে যথাযথ ক্রেডিট না দিয়ে কোথাও ব্যবহৃত হয়, তবে তাতে শিল্পকর্মটির স্রষ্টার অধিকার ক্ষুণ্ন হয়। কপিরাইটের দুটি দিক, একটি হলো_ অর্থনৈতিক স্বার্থ, আরেকটি নৈতিক স্বার্থ। যখন কেউ একজন লেখকের লেখা কোথাও ব্যবহার করবে তখন লেখকের নাম থাকতে হবে। দ্বিতীয়ত, লেখকের লেখা ব্যবহার করতে হলে তা অবিকৃতভাবে করতে হবে। এগুলো মোরাল রাইটের অন্তর্ভুক্ত। অন্যদিকে বাংলাদেশের আইনে একজন লেখক বা শিল্পী জীবিত অবস্থায় তার সৃষ্টিকর্মের অর্থনৈতিক স্বত্ব তিনি আজীবন ভোগ করবেন। তিনি মারা গেলে তার উত্তরাধিকারীরা ৬০ বছর পর্যন্ত স্বত্ব ভোগ করতে পারবেন। এটি অর্থনৈতিক অধিকার। এ কারণেই নজরুলের লেখার স্বত্ব তার পরিবার এখনও ভোগ করতে পারছে। কিন্তু রবীন্দ্রনাথের ক্ষেত্রে ৬০ বছর পেরিয়ে যাওয়ায় তার উত্তরাধিকারীরা স্বত্ব আর ভোগ করতে পারছেন না। অর্থনৈতিক অধিকার সময়ের ব্যবধানে ফুরিয়ে যেতে পারে; কিন্তু নৈতিক অধিকার কখনও শেষ হবে না। হোমারের লেখা হোমারের নামেই, শেক্সপিয়রের লেখা শেক্সপিয়রের নামেই চলতে হবে। আমাদের দেশে এখনও অনেকেই কপিরাইট বিষয়ে জানেন না, মানেনও না। এখানে মিডিয়ার একটা বড় ভূমিকা আছে। লেখালেখি, আলোচনা, টক শো ইত্যাদির মাধ্যমে এ বিষয়গুলোতে সচেতনতা তৈরি করতে পারলে ইতিবাচক অগ্রগতি হবে বলে আমি মনে করি।

সমকাল : একজন শিল্পী-সাহিত্যিক পাইরেসির কারণে ক্ষতিগ্রস্ত হলে তিনি কি কপিরাইট অফিসে আসতে পারেন?

মনজুরুর রহমান : তিনি সরাসরি কোর্টে বা থানায় যেতে পারেন। কিন্তু কোর্টে বা থানায় সুবিধা পেতে হলে তাকে কপিরাইট অফিসে কিছু কাজ করতে হবে। তাকে এখান থেকে কপিরাইট সার্টিফিকেট সংগ্রহ করতে হবে। কপিরাইট সার্টিফিকেট থাকলে সৃষ্টিকর্মের ওপর শিল্পী-সাহিত্যিকের অধিকার আইনগতভাবে প্রতিষ্ঠিত করা সুবিধা হয়। সারা পৃথিবীতেই কপিরাইট রেজিস্ট্রেশন বাধ্যতামূলক নয়। আইনি সুবিধা পেতে হলে আপনাকে রেজিস্ট্রেশন করতে হবে। পাইরেসির কারণে কেউ ক্ষতিগ্রস্ত হলে তাকে সিভিল কোর্টে যেতে হবে অথবা শাস্তি দিতে হলে ক্রিমিনাল কোর্টে যেতে হবে।

সমকাল : কোনো অ্যালবাম বা বইয়ের প্রকাশক যদি শিল্পী-সাহিত্যিককে প্রাপ্য রয়ালটি না দেন তবে সে ক্ষেত্রে তিনি কী করতে পারেন? এখানে কপিরাইট অফিসের ভূমিকা কী?

মনজুরুর রহমান : এক্ষেত্রে আমাদের শিল্পী ও লেখকরা যে ভুলটা প্রথমেই করছেন তা হলো তারা বইয়ের প্রকাশক বা অ্যালবামের প্রকাশকের সঙ্গে কোনো চুক্তি করছেন না। কিন্তু বইয়ের পাণ্ডুলিটি প্রকাশকের হাতে তুলে দেওয়ার আগে চুক্তি করাটা বাধ্যতামূলক। কপিরাইট আইনের ১৯ নম্বর ধারা অনুসারে এ চুক্তি হতে হবে এবং তাতে লেখকের স্বাক্ষর থাকতে হবে। এবং লেখকের প্রাপ্য রয়ালটির হার, চুক্তির সময়সীমা উলি্লখিত থাকতে হবে। এমন চুক্তি থাকে না বলেই সমস্যার উদ্ভব ঘটে। আপনি দেখবেন, সমানে বহু বই অনূদিত হচ্ছে, সেগুলো বইমেলায় বাজারজাত হচ্ছে।
মেধা খরচ করে অনুবাদ করার পরও যদি ৫২ ধারার ব্যত্যয় ঘটে তবে সেটি বেআইনি হবে।

সমকাল : একজন লেখক যদি প্রকাশকের কাছ থেকে রয়ালটি দাবি করেন তবে আইনগতভাবে তাকে প্রকাশকের সঙ্গে চুক্তি করতে হবে।

মনজুরুর রহমান : এটি না করা হলে প্রকাশক বলতে পারেন, লেখকের সঙ্গে আমার কোনো চুক্তি ছিল না। কথা ছিল, আমি তাকে ১০ কপি বই দেব, তার সঙ্গে আমার আর কোনো লেনদেন নেই। এরকম হচ্ছেও।
সমকাল : কপিরাইট অফিসের পক্ষ থেকে প্রকাশকদের চুক্তি করতে বাধ্য করার কোনো উপায় কি আছে?
মনজুরুর রহমান : না। এটা আমরা করতে পারি না। যতক্ষণ পর্যন্ত ক্ষতিগ্রস্ত ব্যক্তি কোর্টে না যাবেন ততক্ষণ পর্যন্ত আমি কোনো উদ্যোগ নিতে পারি না। এর আগে কোনো পদক্ষেপ নেওয়ার ক্ষমতা আইন আমাকে দেয়নি।

সমকাল : অন্য কোনো প্রতিষ্ঠান কি প্রকাশকদের চুক্তি করতে বাধ্য করতে পারে?

মনজুরুর রহমান : অন্য প্রতিষ্ঠানও বাধ্য করতে পারে না। তবে মানসিক চাপটা তৈরি করা যায়। যেমন বইমেলা উপলক্ষে কিছু উদ্যোগ নেওয়া যেতে পারে। বইমেলা শুধু প্রকাশক ও পাঠকের মেলা নয়, এটি লেখক-প্রকাশকের মেলা। একজন প্রকাশক কোনো লেখকের বই প্রকাশ করে যদি তাকে রয়্যালটি না দেন তবে লেখককে রয়্যালটি পাইয়ে দেওয়ার দায়িত্ব বোধহয় এখন আমাদের তৈরি হয়েছে। অন্যায় থেকে দূরে থাকার জন্যই তো আমরা ভাষা আন্দোলন করেছিলাম। এখন এমন লেখকের দেখাও আমি পেয়েছি, যিনি ১৫টি বইয়ের মধ্যে শুধু একটি বইয়ের রয়্যালটি পেয়েছেন। প্রশ্ন হলো, তাহলে লেখক কি সারাজীবন বঞ্চিত হতেই থাকবেন? এটা তো হতে পারে না। আপনি লিখিত চুক্তি করলে লেখককে রয়্যালটি দিতে বাধ্য থাকবেন। প্রকাশক কত কপি বই প্রকাশ করলেন সেটি প্রেসের সার্টিফিকেটসহ লেখককে জানাবেন। বছরের শেষে কত কপি বই বিক্রি হলো সে তথ্য জানাবেন। এগুলো যদি না করা হয় তবে লেখকের অধিকার কীভাবে রক্ষিত হবে? এগুলো যতদিন পর্যন্ত মানা না হবে ততদিন পর্যন্ত বঞ্চনা চলতে থাকবে। এ কারণে আমাদের দেশে প্রফেশনালিজম গড়ে ওঠে না। এদেশে ক'জন লেখক আছেন যারা শুধু লিখেই জীবিকা নির্বাহ করেন? হাতেগোনা কয়েকজন। অথচ লেখকরা যদি ঠিকমতো রয়্যালটি পেতেন তবে পরিস্থিতিটা অন্যরকম হতো। লেখকদের এমন বঞ্চিত ও দুর্দশাগ্রস্ত অবস্থা আমাদের দেখতে হতো না।
সমকাল : আমরা জেনেছি, বাংলা একাডেমী বইমেলায় স্টল বরাদ্দের ক্ষেত্রে একটি নিয়ম করেছে। তারা কোনো প্রকাশনাকে স্টল দেওয়ার আগে লেখকের সঙ্গে প্রকাশকের চুক্তিপত্র জমা দেওয়ার নিয়ম চালু করেছে।
মনজুরুর রহমান : এটা কী করেছে বাংলা একাডেমী? আমি বইমেলা আয়োজক কমিটির একজন সদস্য। এই নিয়ম চালু করার জন্য আমি বারবার অনুরোধ করে আসছি। কিন্তু আমার জানা মতে, এখনও এ ধরনের কোনো নিয়ম চালু হয়নি। এটা করলে এক্ষেত্রে কিছু অগ্রগতি হবে বলে আমি মনে করি। এ বছর নিয়ম করলে আগামী বছরেই হয়তো পুরো সাফল্য আসবে না। কিন্তু দ্বিতীয় বা তৃতীয়বারে সাফল্য আসবে বলে আমার বিশ্বাস। বইমেলায় স্টল বরাদ্দের আগে প্রকাশকের কাছে লেখকের সঙ্গে চুক্তিপত্র জমা দিতে বলবে। যেমন বই ন্যাশনাল লাইব্রেরিতে জমা দিয়ে আইএসবিএন নম্বর নিতে হয় এবং সেই নম্বরের রিসিট জমা দিতে হয় তেমনি কপিরাইট আইনের ১৯ ও ৫২ ধারা অনুসারে লেখকের সঙ্গে চুক্তি বা অনুবাদকের সঙ্গে চুক্তির ফটোকপি একাডেমীকে জমা দিতে হবে। খুব সহজেই এ নিয়ম চালু করা সম্ভব। এটা হলে প্রকাশকদের মধ্যে একটা মানসিক চাপ তৈরি হবে, লেখকদের সঙ্গেও তার একটা স্বচ্ছ সম্পর্ক তৈরি হবে।

সমকাল : লেখক-প্রকাশক চুক্তির কোনো খসড়া কি আপনাদের আছে?

মনজুরুর রহমান : নেই। তবে বাংলা একাডেমী লেখকদের সঙ্গে যে চুক্তি করে সেটি মডেল ধরে নিয়ে একটি চুক্তিপত্র তৈরি করা যেতে পারে। চুক্তি একটা বোঝাপড়া, সে ক্ষেত্রে আলাপ-আলোচনার ভিত্তিতেই শর্তগুলো নির্ধারিত হওয়া দরকার। তাকে কপিরাইট আইনের ১৯ নম্বর ধারা অনুসরণ করা দরকার। আইনসম্মত চুক্তি না হলে সে চুক্তি লেখক-প্রকাশকদের কাজে আসবে না। তবে চুক্তির প্রয়োজনীয়তা সর্বাগ্রে, এটি না হলে লেখকদের স্বার্থ সংরক্ষণ করা আসলেই খুব কঠিন। পাশাপাশি এ কথাও বলে রাখতে চাই, সব প্রকাশক খারাপ নন, অনেক সৎ প্রকাশক আছেন। তারা লেখকের সঙ্গে চুক্তি করে, নিয়মিত রয়্যালটি পরিশোধ করেই ব্যবসা করছেন। এক্ষেত্রে লেখকরা একদলে, প্রকাশকরা বিপরীত দলে, এমন বিবেচনার সুযোগ নেই। প্রকাশকদের সমস্যার দিকেও আমাদের তাকাতে হবে। কিন্তু সবার উদ্দেশ্য হবে আইনসম্মত একটি স্বচ্ছ ব্যবস্থা তৈরি করা, যাতে কেউ ক্ষতিগ্রস্ত হবে না।

সমকাল : প্রকাশকরা অনেক সময় অভিযোগ করেন যে, বই বিক্রি হয় না বলে তারা লেখককে রয়ালটি দিতে পারেন না।

মনজুরুর রহমান :এটি কোনো যুক্তি হতে পারে না। কোনো বই প্রকাশের আগে প্রকাশক যদি বিচার করতে না পারেন বইটি চলবে কি-না তবে সেটি তার ব্যর্থতা। একটি বই যখন প্রকাশিত হচ্ছে, তখন ধরেই নিতে হবে বাজারে বইটির চাহিদা বিষয়ে প্রকাশক সচেতন। এবং সে সচেতনতার অংশ হিসেবে তাকে লেখকের সঙ্গে চুক্তি করতে হবে। এরপর যদি বই বিক্রির ক্ষেত্রে তিনি সাড়া না পান তবে বুঝতে হবে তার বিপণন ব্যবস্থায় দক্ষতার ঘাটতি আছে। তবে এ কথাও সত্য, বই বিক্রির ক্ষেত্র বাড়াতে বইমেলার বাইরে আরও অনেক উদ্যোগ নিতে হবে।

সমকাল : আমরা আশা করব, লেখক-প্রকাশকরা কপিরাইট আইন, রয়ালটি ও চুক্তি বিষয়ে সচেতন হবেন। সময় দেওয়ার জন্য আপনাকে অনেক ধন্যবাদ।
মনজুরুর রহমান : সমকালকেও ধন্যবাদ। 

Source: http://tothakothito.blogspot.com

মফস্বল লেখকদের বই প্রকাশে জটিলতা

মফস্বল লেখকদের বই প্রকাশে জটিলতা

–এবাদত আলী: বাংলাদেশে শিক্ষার হার ক্রমান্বয়ে বেড়ে চলেছে। বাড়ছে শিক্ষিতের হার।  জ্ঞান চর্চার প্রসার ও ঘটছে অতি দ্রুত। পাশাপাশি লেখক ও কবি সাহিত্যিকের সংখ্যা যে আনুপাতিক হারে বৃদ্ধি পাচ্ছে তা বিশ্বাস করার পক্ষে যথেষ্ট যুক্তি রয়েছে।
কেবল কবি সাহিত্যিক তথা সাহিত্য রূপকারদের সাহিত্য রস ভান্ডার পূর্ণ রূপে প্রকাশ করার ক্ষেত্রে বন্ধ্যা ভাবের ঘোর অন্ধকার যেন কিছুতেই অপসারিত হচ্ছেনা। বিশেষ করে মফস্বল এলাকার সাহিত্য প্রেমিকের মনোবাসনা কানায় কানায় পূর্ণ হবার ক্ষেত্রে রয়েছে দারুন বাধা।
মফস্বল এলাকার কবি, গল্পকার, ঔপন্যাসিক  প্রাবন্ধিক, নাট্যকার, এক কথায় যে কোন ধরনের লেখকের কথাই বলা হোকনা কেন, তাদের সৃজিত রচনাবলী পুস্তক আকারে প্রকাশের ব্যাপারে তেমন কোন পৃষ্ঠপোষকতা নেই বল্লেই চলে।
বই বা সাহিত্য পাঠকের সংখ্যা যে হারে বৃদ্ধি পাচ্ছে, মফস্বল এলাকায় বই প্রকাশের মাত্রা তেমন বৃদ্ধি পাচ্ছেনা। মনন শক্তি বা হৃদয় বৃত্তিকে পূর্ণরূপে জাগ্রত করতে একাগ্রতা ও নিষ্ঠার সাথে রচনাবলী লিপিবদ্ধ করে মফস্বলের লেখকদের দিনের পর দিন অপেক্ষা করতে হয়। ধর্ণা দিতে হয় পত্র পত্রিকার সম্পাদক এবং বই প্রকাশের প্রকাশনালয়ের কর্তাব্যক্তির নিকট।
ঐ সকল কবি সাহিত্যিক, প্রাবন্ধিক, জীবনবোধের অন্তহীন রহস্য উদ্ঘাটন করে পান্ডুলিপি রচনা করেন বটে; কিন্তু তা প্রকাশের অভাবেই পাঠক মহলের দোরগোড়ায় পেঁছৈনা।
বই বা সাহিত্য রচনার মধ্য দিয়ে লেখকগণ মানব কল্যানে ব্রতি হয়ে যে সত্য সন্ধান করেন তা অনেক সময় ইঁদুর, উঁইপোকা আর তেলাপোকার উদর পূর্তি ছাড়া পাঠক সমাজে উপস্থাপিত হবার সুযোগ থেকে বঞ্চিত হয়।
আমাদের দেশে সাহিত্য চর্চার পরিষ্ফুটনের ধাপ নগরকেন্দ্রিক। তাই গ্রাম গঞ্জের পরিমন্ডল হতে নগর মহানগরের আলো ঝলমল পরিবেশের পরশে কত লেখক যে খ্যাতির শীর্ষে অবস্থান করতে সম হয়েছেন তার ইয়ত্তা নেই।
অপর দিকে গ্রামীণ পরিবেশের বেড়াজাল ছিন্ন করে নগর- মহানগরীতে স্থান করে নিতে না পারায় অনেক খ্যাতিমান লেখক যে উৎসাহ হারিয়ে পাতা ঝরা বৃরে কান্ডের ন্যায় ঠায় দাড়িয়ে পড়েছেন তা গণনা করে শেষ করা যাবেনা।
যে কোন রচয়িতার রচনাবলী যদি বই এর আকারে পাঠকের হাতে না পৌঁছে , পাঠক বর্গ যদি লেখকের চিন্তা চেতনা সম্পর্কে অবগত হবার সুযোগ হতে বঞ্চিত হয়  তাহলে লেখক আর পাঠকের মাঝে সেতুবন্ধন রচনা হয় কি প্রকারে।
মফস্বল শহরের কোন এক কবির কথা জানি। অনেক ধার দেনা করে তিনি এক খানা কবিতার বই প্রকাশ করেছিলেন, প্রকাশনা উৎসব ও করেছিলেন ঘটা করে।
গন্যমান্য ব্যক্তি, সরকারি আমলাসহ জ্ঞানী-গুণীদের উপস্থিতি ছিলো ব্যাপক। বইটির আলোচনা সমালোচনা হয়েছিলো ঢের।
তবে প্রশংসার পাল্লা বেশ ভারিই ছিলো, কিন্তু পরবর্তীকালে বইয়ের কাটতি নিয়ে তিনি বিপাকে পড়েন। লাইব্রেরী গুলো নতুন লেখকের বই, বিশেষ করে মফস্বল লেখকদের বই বিক্রি করতে নিরুৎসাহ বোধ করেন।
বই বা সাহিত্যের মধ্য দিয়ে মানুষ সত্য,  কল্যাণ আর সুন্দরের সন্ধান পায়। কিন্তু রচিত বই প্রকাশের সুযোগের ক্ষেত্রে যদি প্রতিবন্ধকতা থাকে তবে সে সকল  কল্যাণের ধনভান্ডার অসুন্দরের বন্ধনে আবদ্ধ হতে বাধ্য।
সত্য কথা বলতে কি নগর-মহানগর ছাড়াও মফস্বল শহর হতে গ্রাম-গঞ্জে মননশীল পাঠকের সংখ্যা দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে।
বিভিন্ন ধাঁচের লেখকের সংখ্যাও কম নয়। সে তুলনায় প্রকাশক বা প্রকাশনা সংস্থার সংখ্যা বলতে গেলে শুন্যের কোঠায়।
গ্রাম-গঞ্জের লেখকগণ বই প্রকাশের জন্য তেমন প্রকাশক পাননা। কোন কোন লেখক অতি উৎসাহি হয়ে নিজের অর্থ-কড়ি খরচ করে বই প্রকাশ করলেও বিপনন ব্যবস্থা অনুক’লে নয়।
ফলে মুদ্রিত বই বিক্রি না হওয়ায় অনেক ক্ষেত্রেই লেখা লেখিতে ভাটা পড়ে। প্রখ্যাত লেখক বিমলমিত্র বলেছেন “লেখকদের ধৈর্য হারাতে নেই”।
কিন্তু দীর্ঘদিন ধরে সাহিত্য চর্চার পর সে সাহিত্য যদি পাঠক সমাজের গোচরিভূত না হয় তা হলে লেখনীর মৃত্যু অবধারিত।
মফস্বলে বসবাস করার ফলে সাহিত্য সাধনা যেন তাদের কাছে বিড়ম্বনার শামিল। নগর মহানগর কেন্দ্র্রিক প্রকাশনা ব্যবস্থাকে মফস্বল পর্যায়ে প্রতিষ্ঠিত করতে না পারলে এ বিড়ম্বনার অবসান হওয়া সুকঠিন।
দেশে ভারি শিল্প, মাঝারি শিল্প, এমনকি ক্ষুদ্রয়াতকার শিল্প কারখানা গড়ে তোলার ব্যাপারে উৎসাহের কোন কমতি নেই, নেই সরকারি পৃষ্ঠপোষকতার অভাব।
ঐ সকল খাতে ঋন মঞ্জুর হয় মোটা অংকের। নগর-মহানগর এলাকার প্রকাশনা শিল্প ও তা থেকে বাদ যায় না।
কিন্তু মফস্বল এলাকার প্রকাশনা শিল্প গড়ে তোলার ক্ষেত্রে তেমন উৎসাহ উদ্দীপনা ও পৃষ্ঠপোষকতা আছে বলে মনে হয়না।
পল্লী অবকাঠামো উন্নয়নের জন্য সরকার এবং বেসরকারি সংস্থা সমূহ প্রানান্তকর প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে।
অনেক ক্ষেত্রে কামিয়াবও হয়েছে। পল্লী অঞ্চল তথা মফস্বলের লেখকদের বই প্রকাশের ব্যাপারে তেমন উল্লেখযোগ্য ভূমিকার উদাহরণ আছে বলে মনে হয় না।
বাংলাদেশের মোট জনসংখ্যার প্রায় দুই তৃতীয়াংশ লোক গ্রামে বাস করে। এই বৃহৎ জনগোষ্ঠির মাঝে সাহিত্য ও সংস্কৃতি চর্চাকারির সংখ্যাকে খাটো করে দেখা আদৌ ঠিক নয়।
পল্লী অবকাঠামো উন্নয়নের পাশা পাশি পল্লী অঞ্চল তথা মফস্বল এলাকার সৃজনশীল লেখকদের রচিত বই প্রকাশের ব্যাপারে যত্নশীল হতে হবে।
সার্বিক সহায়তাদানের মাধ্যমেই কেবল তা সম্ভব।

ক্ষেত্রে সরকার এবং  বেসরকারি সংস্থা সমূহকে এগিয়ে আসতে হবে।

Source: http://pabnanews24.com

Friday, July 11, 2014

বই প্রকাশে আগ্রহীদের জন্য: অন্যধারা.কম

বই প্রকাশে আগ্রহীদের জন্য : অন্যধারা.কম 

 নিজের টাকায় বই বের না করাই ভালো। এরপরও যারা নিজের টাকায় সম্পূর্ণ বই প্রকাশ করতে চান, তাদের সুবিধার্থ নিচে বই প্রকাশের একটি হিসার দেয়া হলো। অনেক প্রকাশক হয় তো আরো কম মূল্যে বই প্রকাশ করে দিতে পারবেন,


কিন্তু এর চেয়ে কম খরচে মানসম্মত একটি বই প্রকাশ করা আমাদের পক্ষ সম্ভব না, আবার স্বনামধন্য কয়েকটি প্রকাশনা প্রতিষ্ঠান যে পরিমাণ অর্থ খরচ করে পাঠক নন্দিত একটি বই প্রকাশ করেন, সেভাবে প্রকাশ করলেও বইয়ের মূল্য পাঠক ক্রয়ক্ষমতার বাইরে চলে যাবে।

------------------------------------------------------------------------
৩ ফর্মার বই:
সাইজ : ৯×৬ ইঞ্চি
ফর্মা সংখ্যা : ৩ (৪৮ পৃষ্ঠা)
ভেতরের কাগজ : ৮০ গ্রাম দেশী
ভেতরের ছাপা : এক কালার
বাঁধাই : বোর্ড বাঁধাই
কভার পেপার : ১২০ গ্রাম আর্ট পেপার।
অলঙ্করণ : হবে না
মোট খরচ : ১০০ কপি ১২,০০০ টাকা, ২৫০ কপি, ১৬,০০০ টাকা, ৩০০ কপি ১৯,০০০ টাকা, ৫০০ কপি ২৫,০০০ টাকা।
-----------------------------------
যে ধরনের বই হতে পারে: কবিতা
------------------------------------

৪ ফর্মার বই:
সাইজ : ৯×৬ ইঞ্চি
ফর্মা সংখ্যা : ৪ (৬৪ পৃষ্ঠা)
ভেতরের কাগজ : ৮০ গ্রাম দেশী
ভেতরের ছাপা : এক কালার
বাঁধাই : বোর্ড বাঁধাই
কভার পেপার : ১২০ গ্রাম আর্ট পেপার।
অলঙ্করণ : হবে না
মোট খরচ : ১০০ কপি ১৫,০০০ টাকা, ২৫০ কপি, ১৮,০০০ টাকা, ৩০০ কপি ২২,০০০ টাকা, ৫০০ কপি ২৮,০০০ টাকা।
------------------------------------------
যে ধরনের বই হতে পারে: কবিতা, গল্প
------------------------------------------

৫ ফর্মার বই:
সাইজ : ৯×৬ ইঞ্চি
ফর্মা সংখ্যা : ৫ (৮০ পৃষ্ঠা)
ভেতরের কাগজ : ৮০ গ্রাম দেশী
ভেতরের ছাপা : এক কালার
বাঁধাই : বোর্ড বাঁধাই
কভার পেপার : ১২০ গ্রাম আর্ট পেপার।
অলঙ্করণ : হবে না
মোট খরচ : ১০০ কপি ১৭,০০০ টাকা, ২৫০ কপি, ১৯,০০০ টাকা, ৩০০ কপি ২৫,০০০ টাকা, ৫০০ কপি ৩০,০০০ টাকা।
-------------------------------------------------------------
যে ধরনের বই হতে পারে : কবিতা, গল্প, প্রবন্ধ, উপন্যাস
-------------------------------------------------------------

৬ ফর্মার বই:
সাইজ : ৯×৬ ইঞ্চি
ফর্মা সংখ্যা : ৫ (৯৬ পৃষ্ঠা)
ভেতরের কাগজ : ৮০ গ্রাম দেশী
ভেতরের ছাপা : এক কালার
বাঁধাই : বোর্ড বাঁধাই
কভার পেপার : ১২০ গ্রাম আর্ট পেপার।
অলঙ্করণ : হবে না
মোট খরচ : ১০০ কপি ২০,০০০ টাকা, ২৫০ কপি, ২২,৫০০ টাকা, ৩০০ কপি ২৬,০০০ টাকা, ৫০০ কপি ৩৩,০০০ টাকা।
---------------------------------------------------------------
যে ধরনের বই হতে পারে : কবিতা, গল্প, প্রবন্ধ, উপন্যাস
---------------------------------------------------------------

৭ ফর্মার বই:
সাইজ : ৯×৬ ইঞ্চি
ফর্মা সংখ্যা : ৭ (১১২ পৃষ্ঠা)
ভেতরের কাগজ : ৮০ গ্রাম দেশী
ভেতরের ছাপা : এক কালার
বাঁধাই : বোর্ড বাঁধাই
কভার পেপার : ১২০ গ্রাম আর্ট পেপার।
অলঙ্করণ : হবে না
মোট খরচ : ১০০ কপি ২২,০০০ টাকা, ২৫০ কপি, ২৬,৫০০ টাকা, ৩০০ কপি ৩০,০০০ টাকা, ৫০০ কপি ৩৫,০০০ টাকা।
----------------------------------------------------------------
যে ধরনের বই হতে পারে : কবিতা, গল্প, প্রবন্ধ, উপন্যাস
----------------------------------------------------------------

৮ ফর্মার বই :
সাইজ : ৯×৬ ইঞ্চি
ফর্মা সংখ্যা: ৮ (১২৮ পৃষ্ঠা)
ভেতরের কাগজ : ৮০ গ্রাম দেশী
ভেতরের ছাপা : এক কালার
বাঁধাই : বোর্ড বাঁধাই
কভার পেপার : ১২০ গ্রাম আর্ট পেপার।
অলঙ্করণ : হবে না
মোট খরচ : ১০০ কপি ২৫,০০০ টাকা, ২৫০ কপি, ২৮,৫০০ টাকা, ৩০০ কপি ৩৩০০০ টাকা, ৫০০ কপি ৩৭,০০০ টাকা।
-------------------------------------------------------------
যে ধরনের বই হতে পারে : কবিতা, গল্প, প্রবন্ধ, উপন্যাস
--------------------------------------------------------------

৯ ফর্মার বই:
সাইজ : ৯×৬ ইঞ্চি
ফর্মা সংখ্যা : ৯ (১৪৪ পৃষ্ঠা)
ভেতরের কাগজ : ৮০ গ্রাম দেশী
ভেতরের ছাপা : এক কালার
বাঁধাই : বোর্ড বাঁধাই
কভার পেপার : ১২০ গ্রাম আর্ট পেপার।
অলঙ্করণ : হবে না
মোট খরচ : ১০০ কপি ২৭,০০০ টাকা, ২৫০ কপি, ৩০,৫০০ টাকা, ৩০০ কপি ৩৫০০০ টাকা, ৫০০ কপি ৩৯,০০০ টাকা।
----------------------------------------------------------------
যে ধরনের বই হতে পারে : কবিতা, গল্প, প্রবন্ধ, উপন্যাস
-----------------------------------------------------------------


১০ ফর্মার বই:
সাইজ : ৯×৬ ইঞ্চি
ফর্মা সংখ্যা : ১০ (১৬০ পৃষ্ঠা)
ভেতরের কাগজ : ৮০ গ্রাম দেশী
ভেতরের ছাপা : এক কালার
বাঁধাই : বোর্ড বাঁধাই
কভার পেপার : ১২০ গ্রাম আর্ট পেপার।
অলঙ্করণ : হবে না
মোট খরচ : ১০০ কপি ২৯,০০০ টাকা, ২৫০ কপি, ৩৩,৫০০ টাকা, ৩০০ কপি ৩৭০০০ টাকা, ৫০০ কপি ৮০,০০০ টাকা।
-------------------------------------------------------------
যে ধরনের বই হতে পারে : কবিতা, গল্প, প্রবন্ধ, উপন্যাস
----------------------------------------------------------------
লেখা ও অর্ডার পাঠানোর ঠিকানা: মুন্নী প্রকাশ, অফিস: ২৮/এফ, টয়েনবী সার্কুলার রোড (৫মতলা) মতিঝিল বা/এ, ঢাকা-১০০০, শো-রুম: ৩৮/২ক, বাংলাবাজার ঢাকা-১১০০  E-mail: munnipk90@gmail.com
---------------------------------------------------------------------
প্রিন্ট অ্যান্ড সাপ্লাইয়ের জন্য যে কোনো অর্ডার অনলাইনে নেয়া যাবে:
মূল্য পরিশোধ করা যাবে ব্যাংক ও বিকাশ-এর মাধ্যমে।
যে ব্যাংক একাউন্টে বইয়ের মূল্য পরিশোধ করা যাবে:-----
Islami Bank Bangladesh Limited
A/C: MUNNI PROKASHON
A/C NO: 20501970100423013
উল্লেখিত ব্যাঙ্কে টাকা জমা দেয়ার পরে পে-স্লিপ স্ক্যান করে ই-মেলে পাঠাতে হবে- munnipk90@gmail.com-
বিকাশ করা যাবে এই একাউন্টে:----------------------
bKash Account No: 01711 83 49 44 তে পেমেন্ট করে TrxID নাম্বার SMS করুন।
-----------------------------------
বই প্রকাশের সাথে সাথে ট্রান্সপোর্ট বই পৌছে যাবে আপনার ঠিকানায়

----------------------------------

Last modified on Wednesday, 09 July 2014 15:08  




     

Saturday, March 29, 2014

আধুনিক প্রকাশনী: বিস্তারিত তথ্য

আধুনিক প্রকাশনী


আধুনিক প্রকাশনী ১৯৯০ সালে প্রতিষ্ঠিত। প্রতিষ্ঠার শুরু থেকেই ধর্মীয় (ইসলামী) বিষয়ের উপর বই প্রকাশ করে বেশ সুনাম কুড়িয়েছে আধুনিক প্রকাশনী।     
 
অবস্থান
বাংলাবাজার পোস্ট অফিস থেকে ৫০০ গজ পূর্ব-উত্তর কোণে প্রকাশনীটি অবস্থিত।
 
ঠিকানা
২৫, শিরিশদাস লেন, বাংলাবাজার, ঢাকা- ১০০০
ফোন- ৭১১৫১৯১
ফ্যাক্স- ৮৮-০২- ৭১৭৫১৮৪
ই-মেইল- adhunikprokashoni@yahoo.com
 
প্রকাশিত বইয়ের ধরন
  • গল্প
  • উপন্যাস
  • কবিতা
  • কিশোর সাহিত্য
  • কিশোর উপন্যাস
  • কবিতা
  • অনুবাদ বা অনূদিত
  • আইন
  • হাদিস গ্রন্থ
  • তাফসীর গ্রন্থ
  • সায়েন্স ফিকশন
 
প্রকাশনীর সেবা (সার্ভিস)
  •  প্রকাশনীতে খুচরা বই বিক্রয় করা হয়।
  •  গ্রাহকের চাহিদা অনুসারে ডাকযোগে বই বিক্রয়ের ব্যবস্থা রয়েছে।
  • পান্ডুলিপি বই প্রকাশের জন্য জমা নেওয়া হয়। পান্ডুলিপি বই প্রকাশের জন্য সিলেক্ট হলে রাখবে অন্যথা ফেরত দিবে এবং যদি এই বই প্রকাশ করে তাহলে জমা রাখবে।
  • নবীন লেখক যদি বই প্রকাশ করতে চায় তবে তার পান্ডুলিপি প্রকাশনীতে জমা দিতে হবে। তার পান্ডুলিপি নিয়ে বোর্ড বসে। এ বোর্ডে পান্ডুলিপি নিয়ে আলোচনা করা হয়। এ বোর্ড যদি মনে করে এ পান্ডুলিপি থেকে বই প্রকাশ করা যায়। তখনই বই প্রকাশ করা হয়।
  • বই প্রকাশের জন্য পান্ডুলিপি পছন্দ করা হয় তাহলে লেখকের সাথে চুক্তি করে বই প্রকাশ করা হয়। এই ক্ষেত্রে লেখককে সম্পূর্ণ খরচ বহন করতে হয়।
  • চুক্তি অনুসারে বইয়ের বিক্রির উপর লেখক ৫০% সম্মানী পেয়ে থাকে।
  • বই প্রকাশের সম্পূর্ণ খরচ লেখক বহন করলে বিক্রিত অর্থের ২৫% কমিশন প্রকাশনী নিয়ে থাকে।
  • এই প্রতিষ্ঠানের আলাদা কোন পরিবেশক নেই। প্রতিষ্ঠান নিজেই পরিবেশনের কাজ করে থাকে।
 
প্রকাশিত বই
 
ইসলামী বই
  • হাদীসগ্রন্থ
  •  বুখারী
  •  মুসলিম  
  •  আবু দাউদ  
  •  তিরমিযি
  •  নাসাঈ  
  •  ইবনে মাজাহ
 
  • তাফসীরগ্রন্থ
  •  তাফসীরের মাঃরেফুল কুরআন
  •  তাফসীরে জানালাইন ইবনে কাসারী।
 
উপন্যাস
নাম
লেখকের নাম
মূল্য (টাকা)
গোড় থেকে সোনারগাঁও
শফিকউদ্দীন সরকার
২০০
বার পাইকার দূর্গ
আবদুল্লাহ আল কাফা
১৫০
ইহুদী কন্যা রেহানা
আবদুল্লাহ আল কাফা
৯২
প্রেম ও পূর্ণিমা
আবদুল্লাহ আল কাফা
১৩৫
বিপন্ন প্রহর
আবদুল্লাহ আল কাফা
১২৫
 
অনূদিত গ্রন্থ
নাম
লেখকের নাম
মূল্য (টাকা)
ইসলাম মানবাধিকার সালাউদ্দিন
১৭০
মাতা-পিতা ও সন্তানের অধিকার আল্লামা ইউসুফ ইসলাহী
১৩৫
ভ্রান্তির বেড়াজালে ইসলাম মোঃ কুতুব
১৪৫
 
সায়েন্স ফিকশন
নাম
লেখকের নাম
মূল্য (টাকা)
মানব সৃষ্টির কর্ম বিকাশ
ডাঃ আলী আল
১০৫
মানব বংশগতির ধারা
আব্দুল হক
১৯০
সত্য দর্শন
আঃ রউফ
২০০
কোরআন ও হাদীসের আলোকে জন্ম নিয়ন্ত্রণ
প্রফেসর ডঃ আব্দুল হক
২০০

Friday, March 28, 2014

বুক মেকার পাবলিকেশন (বাংলাদেশ) লি: বই প্রকাশের বিস্তারিত তথ্য

বুক মেকার পাবলিকেশন (বাংলাদেশ) লি:


বুক-মেকার পাবলিকেশন (বাংলাদেশ) লি: একটি বাংলাদেশী প্রকাশনা প্রতিষ্ঠান। এই প্রকাশনা প্রতিষ্ঠানটি ২০১২ সালের ১০ই সেপ্টেম্বার "পেশাজীবি লেখক চাই, বাঁধনছাড়া কলম চাই" স্লোগানের মাধ্যমে যাত্রা শুরু করে। প্রতিষ্ঠানটি পেশাদার লেখক এবং নতুন লেখকদের বই প্রকাশ করে থাকে।
 
 
যোগাযোগের ঠিকানা:
কক্ষ # বি৮৫, কনকর্ড এম্পোরিয়াম শপিং কমপ্লেক্স, কাঁটাবন, শাহবাগ, ঢাকা-১২০৫
ফোন: ০১৯৭২-৬২৮৪৭৪, ০১৬৮০-৫৬৬৭৮৮, ০১৬১১-৮২৪৭৪২
-মেইল: book-maker@mail.com

 
 
প্রকাশের ক্ষেত্রে করনীয়:
  • কতৃপক্ষের নিকট স্ক্রিপ জমা দিতে হয়।
  • স্ক্রিপ পছন্দ হলে নির্বাচন করা হয়।
  • চুক্তি পত্র করা হয়।
  • চুক্তির পর ছয় মাসের মধ্যে প্রকাশ করা হয়।

 

পারিশ্রমিক:
এই প্রকাশনা সংস্থাটিতে দুই ভাবে পারিশ্রমিক দেওয়া হয়:
  • নতুন লেখকদের জন্য
  • পেশাদারী/পুরাতন লেখকদের জন্য
নতুন লেখক এবং পুরাতন লেখক উভয়ের পারিশ্রমিকই সমান। তবে নতুন লেখকদের ক্ষেত্রে চুক্তি থাকে নুন্যতম তিন বছর এই প্রতিষ্ঠান থেকে লেখা প্রকাশ করতে হয়। পেশাদারী লেখকদের ক্ষেত্রে এ ধারনের কোন বাধ্যবাধকতা নেই।
 
খোলা বন্ধের সময় সূচি:
প্রতিদিন দুপুর ১২ টা থেকে রাত ৮.০০ পর্যন্ত খোলা থাকে।

Source: http://www.online-dhaka.com